Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
একজন সফল মৎস্য চাষির গল্প
ছবি
ডাউনলোড

১৯৯২ সালে এইচএসসি পড়াকালীন পৈত্রিক সম্পত্তির দেড় বিঘা জমিতে মাছ চাষ শুরু করেছিলেন মো. সাইফুল হক টুটুল। তিনি ঝালকাঠি সদর উপজেলার নেহালপুর গ্রামের মোশারফ হোসেনের পুত্র। মাছ চাষে সফলতা পেয়ে বর্তমানে ২২ বিঘা জমিতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করছেন তিনি। মৎস্য চাষি মো. সাইফুল হক জানান, ছাত্রজীবন থেকে চাকরির প্রতি কোনো আগ্রহ না থাকায় আত্মকর্মী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার উপায় খুঁজতে ছিলাম। দেশের বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানলাম, মাছ চাষ করে অনেকে সাবলম্বী হয়েছেন। তখন পৈত্রিক সম্পত্তির দেড় বিঘা জমিতে পরিত্যক্ত পুকুরে পরীক্ষামূলকভাবে মাছ চাষ শুরু করি। এতে বেশ লাভবান হওয়ায় পড়াশোনার পাশাপাশি মাছ চাষের পরিমাণও বৃদ্ধি করতে থাকি। তখন কোনো প্রশিক্ষণও ছিল না। পৈত্রিক সম্পত্তির চার বিঘা জমিতে নিজের চেষ্টায় ও পিতার দেওয়া পুঁজিতে মাছ চাষ করতে থাকি। ইতোমধ্যে সমাজকল্যাণ বিষয়ে বরিশাল ব্রজমোহন বিশ^বিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করি।

এরপর যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এবং সরকারি-বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে ২০১০ সালে বাণিজ্যিকভাবে মৎস্য চাষ করতে থাকি। বর্তমানে পৈত্রিক সম্পত্তির চার বিঘা এবং ১৮ বিঘা জমি লিজ নিয়ে মোট ২২ বিঘা জমিতে মাছের চাষ করছি।

এখন মৃগেল, ব্রিকেট, পাবদা, তেলাপিয়া, রুই, কাতলসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির মাছ রয়েছে মৎস্য খামারে। ঝালকাঠি জেলার সফল মৎস্য চাষিদের মধ্যে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে তালিকাভুক্ত রয়েছি।

অন্যদিকে আরেক সফল মৎস্য চাষি শহিদুল ইসলাম জানান, বেকার থাকায় কর্মসংস্থান হিসেবে ২৮ বছর বয়সে ২০০০ সালে বেসরকারি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ৮০ শতাংশ জমিতে তেলাপিয়া, পাঙ্গাস, রুই, কাতলের সমন্বিত চাষ শুরু করি। যুব উন্নয়নে মৎস্য চাষ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে চাষাবাদ সম্প্রসারণ করতে সরকারি-বেসরকারিভাবে ঋণ সহায়তা নিয়ে বর্তমানে ২শ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে চাষাবাদ করতে থাকি। এতে বেশ লাভবান হচ্ছি এবং সফলতা পাচ্ছি।

শহিদুল ইসলাম ঝালকাঠি জেলা ঘের মালিক সমিতির সভাপতি এবং ঘের মালিকদের সমন্বয়ে গঠিত সততা মৎস্য ঘের মালিক সমিতির সভাপতি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কার্যালয়ে ঘের মালিকদের প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করছেন।

মৎস্য চাষি সাইফুল হক টুটুল ও শহিদুল ইসলাম জানান, আমরা পাঁচ বছর মেয়াদে জমির লিজ নিয়ে থাকি স্থানীয় জমির মালিকদের কাছ থেকে। প্রতিবছরে শতাংশে ১০০ টাকা হারে লিজের চুক্তি ধার্য্য করা হয়। আম্ফানে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের অনেক মাছ ঘের থেকে বেরিয়ে গেলেও প্রণোদনা হিসেবে আমরা কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি। পরিবহন ও খাদ্যসহ মাছ চাষের প্রতিটি উপকরণের দাম বাড়লে মাছের দাম বাড়েনি।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা তাসলিমা জানান, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান অথবা আত্মকর্মী হিসেবে উদ্যোক্তা তৈরিতে মাছ চাষ গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখছে। সফল চাষিদের সার্বিক পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি মাছ চাষে আগ্রহী করতে যুবকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

ঝালকাঠি জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল কৃষ্ণ ওঝা জানান, সরকার কর্তৃক ঘোষিত করোনা দুর্যোগে যাতে কোনো ধরনের খাদ্য ঘাটতি না পড়ে এ জন্য সব ধরনের জমিকে চাষাবাদের আওতায় নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

তথ্যসূত্রঃ আতিকুর রহমান ঝালকাঠি, ৯ জুলাই, ২০২০, সময়ের আলো।